page contents
Cool Neon Green Outer Glow Pointer

কখনো কি ভেবে দেখেছেন প্লেন বা বিমান কিভাবে চলে??

প্লেন কিভাবে চলে?– প্লেন চলার সাথে নিউটন এর গতির দ্বিতীয় সুত্র এবং দানিয়েল বার্নুলি-র ফ্লুয়িড এর সুত্র জড়িত। আমরা জানি যে কোন জিনিষ এর উপর সবদিক থেকে বল কাজ করতে থাকে এক্ষেত্রে আমরা বলবো যে কোন জিনিষ এর উপর চার দিক থেকে চারটি বল কাজ করে সামনে পেছনে উপরে নিচে। ঠিক তেমনি প্লেনের উপর চারটি বল কাজ করে সামনে-Thrust , পেছনে- Drag , নিচে – Gravity বা Weight , উপরে- Lift । যখন প্লেনের উপর এই চারটি বল সমান থাকে তখন প্লেন দাড়িয়ে থাকে। 




প্লেন সামনে চলার জন্য প্লেনের ইঞ্জিন চালিয়ে পেছনের বলের থেকে সামনের দিকে বেশি বল (Thrust) সৃষ্টি করা হয় তখন প্লেন সামনে চলতে থাকে পেছনের থেকে সামনের বলের পরিমান যত বাড়তে থাকে প্লেন তত গতিতে সামনে এগোতে থাকে। এবং প্লেন উড়ার জন্য সামনের গতির সাথে সাথে প্লেনের সামনের বড় ডানা (wing) পেছনের ছোট ডানা (horizontal stabilizer ) এবং লেজ ( vertical stabilizer ) উচু নিচু করে ঘুরিয়ে একটি বিশেষ আকৃতি দেওয়া হয় তাতে করে প্লেনের নিচের অংশের বাতাস যেমন তেমনি থাকে কিন্তু উপরের অংশের বাতাস জোরে বইতে থাকে । বাতাস যখন জোরে বইতে থাকে তখন বাতাসের প্রেসার কমে যায়। অর্থাৎ নিচের বাতাসের থেকে উপরের বাতাসের প্রেসার কমে যায় এবং নিচের বাতাস প্রেসার দিয়ে প্লেন কে উপরে উঠিয়ে দেয় । এবং ঠিক এর উল্টা প্রসেসে প্লেন আকাশ থেকে নিচে নেমে আসে। 



অর্থাৎ প্লেনের ইঞ্জিন এবং ডানা উড়ার জন্য খুবি জরুরি। একটি প্লেনের সমস্ত বডি, প্লাস প্যাসেঞ্জার, প্লাস লাগেজ সব মিলিয়ে সর্বউচ্চ যত টুকু ওজন হতে পারে তা ক্যালকুলেশন করে কতটা শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং কত বড় ডানা দরকার তা নির্ধারন করা হয়। প্লেন যখন তৈরি করা হয় তখন এর ভেতর পানির ট্যাঙ্ক রেখে পানি বাড়িয়ে কমিয়ে এর ওজনের পরীক্ষা করা হয় । 




প্রথম যুগে সব প্লেনের ইঞ্জিন ছিল পিস্টন ইঞ্জিন । বর্তমানে বড় বড় প্যাসেঞ্জার প্লেনগুলোতে পিস্টন ইঞ্জিন ব্যাবহার হয় না তবে ছোট প্লেন এবং ট্রেইনিং প্লেনে এখনো পিস্টন ইঞ্জিন ব্যাবহারিত হয় । 



পিস্টন ইঞ্জিন আমাদের কারের ইঞ্জিন এর মত । একের অধিক সিলিন্ডার লাগানো থাকে বিভিন্য শেপে। কখনো সিলিন্ডার গুলো একি লাইনে কখনো দুই লাইনে কখনো ভি শেপে কখনো গোল করে শাফট এর চারিধারে লাগানো থাকে। এই শেপ এর উপর নির্ভর করে একে ক্যাটাগরাইজড করা হয়। তবে যে শেপেই হোক একই রকম কাজ করে। সিলিন্ডার এর ভেতর বাতাস এবং গ্যাসলিন ঢুকানো হয় এবং প্লাগ এর মাধ্যমে স্পার্ক সৃষ্টি করা হয়। ফলে ওই বায়ু উতপ্ত হয়ে আয়তনে বাড়ে এবং পিস্টন কে নিচে ঠেলে নিয়ে যায়, এই পর্য্যায় সিলিন্ডার এর একটি ভাল্ব খুলে যায় এবং বায়ু বের হয়ে যায় এবং পিস্টন টি উপরে উঠে যায়। এরকম ভাবে ক্রমাগত কয়েকটি পিস্টন উঠা নামার ফলে একটি শাফট ঘুরতে থাকে এবং তার মাথায় প্রপেলার ঘুরতে থাকে। 




প্রপেলার যখন ঘোরে তখন সেটা প্লেনকে সামনে টেনে নিয়ে যায়। একি সাথে শাফট এর সাথে বেল্ট দিয়ে একটি অল্টারনেটর যুক্ত থাকে একদম একি রকম যেটি আমাদের মটরগাড়ি গুলতে থাকে, তা থেকে বিদ্যু উৎপন্য হয় প্লেনের ভেতর লাইট, এসি ও অন্যান্য ইনুস্ট্রমেন্ট চালানোর জন্য । 



পিস্টন ইঞ্জিন যথেষ্ট স্টাবল ইঞ্জিন কিন্তু এটির অসুবিধা হল এটি দিয়ে অনেক উঁচুতে উড়া সম্ভব না প্যাসেঞ্জার প্লেনের জন্য সেফ উচ্চতা ছিল ৩২০০০ ফিট সর্বউচ্চ এবং এটির গতি ও লিমিটেড ছিল প্যাসেঞ্জার প্লেনের সর্বউচ্চ সেফ গতি ছিল ৩৭৫ mph। 







গতির সাথে পাল্লা দেবার জন্য বিজ্ঞানী রা নজর দেয় টার্বো ইঞ্জিন বা টার্বাইন পাওয়ারড ইঞ্জিনের দিকে। বিমানের ইঞ্জিন হিসাবে ব্যাবহারের অনেক অনেক আগেই বিভিন্য রকম টার্বাইন ইঞ্জিনের ব্যাবহার শুরু হয়েছিল । যেমনঃ স্ট্রিম টার্বাইন,গ্যাস টার্বাইন,ওয়াটার টার্বাইন,উইন্ড টার্বাইন। ১৯৪০ থেকে ১৯৫০ সালের দিকে গ্যাস টার্বাইন উপর ব্যাপক গবেষণা চলতে থাকে কিভাবে এটিকে বিমানে ব্যাবহার করা যায়। অনেক রকম ইঞ্জিন এর আইডিয়া বের হয় কিন্তু শেষ পযন্ত দুইটি ইঞ্জিন ব্যাবহার যোগ্য বলে প্রতীয়মান হয় এবং ব্যাপক হারে ব্যাবহার শুরু হয় এর একটি হল টার্বোপ্রপ অপরটি হল টার্বোজেট ইঞ্জিন। প্লেনের জন্য উদ্ভাবিত এই উভয় ইঞ্জিনের মৌলিক কার্যকৌশল একই। 

উভয় প্রকার ইঞ্জিনে কমন চারটি অংশ থাকে প্রথমে কমপ্রেসার তারপর কম্বাসন চেম্বার তারপর টার্বাইন এবং শেষে এগজস্ট নজেল । কমপ্রেসর এমন ভাবে ঘোরে যে ওই দিক থেকে বাতাস কমপ্রেসারে ঢোকে, কমপ্রেসারের ভেতর বিশেষ এঙ্গেলে ব্লেড লাগানো ১০ থেকে ১৩ টি ডিস্ক থাকে, একটি ডিস্ক ঘুরতে থাকে পরের ডিস্কটা ফিক্সড থাকে এভাবে ডিস্ক গুলো বসান থাকে, বাতাস একটি ডিস্ক থেকে আরেকটি ডিস্কে যেতে থাকে কম্প্রেসড হতে থাকে এবং এর প্রেসার এবং তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং ফাইনালি বাইরের বাতাসের তুলনায় এর প্রেসার ৩৫% এবং তাপমাত্রা ১০০০ ডিগ্রি বেশি হয়ে কম্বাসন চেম্বারে আসে। কম্বাসন চেম্বারে উতপ্ত বাতাসের সাথে তেল এর মিশ্রণ ঘটানো হয় । তেল যখন উতপ্ত বাতাসের সাথে মেশে তখন এটি জ্বলে উঠে এবং তাপমাত্রা বেড়ে ১৬০০ থেকে ২১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়ে যায় এবং তখনি হিট এনার্জি উৎপন্ন হয়ে দ্রুতবেগে টার্বাইনে প্রবেশ করে। এই এনার্জির কিছু অংশ ব্যায় হয় টার্বাইন এর ডিস্ক কে মিনিটে ১০ হাজার বার ঘুরাতে, বাকি অংশ এগজস্ট নজেল দিয়ে দ্রুত বাইরে বের হয়ে যায়। টার্বাইন যখন ঘোরে তখন টার্বাইন এর ডিস্ক এর কেন্দ্রের সাথে লাগানো একটি শাফট পুরা ইঞ্জিনের কেন্দ্র দিয়ে উল্টা দিকে যেয়ে কমপ্রেসারের ডিস্ক গুলো ঘুরাতে থাকে, এবং আরও বাতাস টেনে নেয় এবং প্রক্রিয়াটা ক্রমাগত চলতে থাকে । এই পর্য্যায় এসে টার্বোপ্রপ আর টার্বোজেট ইঞ্জিনের কার্যক্রম আলাদা। 

টার্বোজেট ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে এনার্জির যে অংশ টি এগজস্ট নজেল দিয়ে পেছনে দ্রুত বের হয়ে যায় তা নিউটনের দ্বিতীয় সুত্র অনুযায়ী প্লেন কে সামনে ঠেলে দেয়। 



আপর দিকে টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে টার্বাইন এর ডিস্ক এর কেন্দ্রের সাথে লাগানো শাফট টি কমপ্রেসারের সাথে সংযুক্ত হয়ে আরও এগিয়ে যেয়ে একটি গিয়ারবক্স এ শেষ হয় এবং এই গিয়ারবক্স এর সাথে একটি প্রপেলর যুক্ত থাকে। এবং এই প্রপেলর যখন ঘোরে তখন পিস্টন ইঞ্জিন প্লেনের মত একই ভাবে প্লেনকে সামনে টেনে নিয়ে যায়। 



টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের সামনে এগিয়ে যাবার প্রসেস পিস্টন ইঞ্জিনের মত হলেও এটি পিস্টন ইঞ্জিনের চেয়ে অনেক এফিসিয়েন্ট । সর্বউচ্চ গতি আর উঁচুতে ওড়ার ক্ষমতা ও বেশি। 



মেন্টেনেন্সের খরচ এবং ফুয়েল খরচ ও কম যেহেতু টার্বোজেট ইঞ্জিনের মত এগজস্ট নজেল দিয়ে পেছনে দ্রুত গ্যাস বের হবার দরকার পড়ে না, ফলে এটি খুবি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এখন পযন্ত এটি অসংখ্য মিলিটারি এবং বেসরকারি প্লেনে ব্যাবহারিত হচ্ছে। 









টার্বোশাফট ইঞ্জিন হল টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের অরেকটি রুপ। এক্ষেত্রে প্রপেলার টি সামনে না ঘুরে উপরে ঘোরে। যা আমরা দেখি হেলিকপ্টারে ব্যাবহার হয়। 






টার্বোজেট ইঞ্জিন আবিস্কার হবার পর এটি ব্যাপক হারে মিলিটারি প্লেনে ব্যাবহার শুরু হয় এবং একটু দেরিতে হলেও বেসরকারি যাত্রীবাহী বিমানে ব্যবাহার শুরু হয়। কিন্তু বেসরকারি বিমানে এটি খুবি অলাভজনক হিসাবে দেখা দেয়, টার্বোজেট ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে এগজস্ট নজেল দিয়ে দ্রুত বেগে গ্যাস নির্গত হয়া টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আর কন্টিনিউ এই প্রসেসে প্রচুর ফুয়েল ব্যায় হয়। তাছাড়া এই দ্রুত বেগে গ্যাস নির্গত হয়ার সময় প্রচুর শব্দ হয় যা যাত্রী দের জন্য খুবি কষ্টকর। এবং বেশ কয়েকটি এক্সিডেন্ট এর ঘটনা ঘটে। এই পয্যায় এসে এই সমস্যার সমাধানে আবিস্কার হয় টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। বেসরকারি বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে টার্বোজেট ইঞ্জিন সফল ভাবে তেমন ব্যাবহার হয়নি। এমন কি কিছু বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের কোন একটি মডেলে টার্বোজেট ইঞ্জিন লাগিয়ে পরবর্তীতে তা চেঞ্জ করে টার্বোফ্যান লাগায় যেমনঃ Boeing- 707 , DC-8 । 







টার্বোজেট ইঞ্জিনের প্রথম বেসরকারি যাত্রীবাহী প্লেন ছিল যুক্তরাজ্য এর Comet এবং শেষ দুইটি টার্বোজেট ইঞ্জিনের বেসরকারি যাত্রীবাহী প্লেন হল Tupolev- 144 এবং Concorde. এক্সিডেন্ট এর কারনে Tupolev- 144 বন্ধ হয়ে যায়। অপর দিকে Concorde ২৭ বছর ধরে সার্ভিসে ছিল এবং লাস্ট একটা এক্সিডেন্ট এর পর এটি বন্ধ করা হয় কিন্তু আসল বিষয় ছিল অলাভজনক। পুরা সময় টা সরকারি ভর্তুকির উপর নির্ভর ছিল । 





টার্বোফ্যান ইঞ্জিন আসে টার্বোজেট থেকে। মুল গবেষণার বিষয় ছিল ফুয়েল খরচ এবং শব্দ কমানো । এবং জিনিষটাকে রিলায়েবল এবং নিরাপদ করা । গবেষণায় দেখা যায় টার্বাইন ঘোরানোর জন্য ফুয়েল মিশ্রিত গ্যাস দরকার পড়লেও পেছনে দ্রুত বেরিয়ে যাবার জন্য ফুয়েল মিশ্রিত গ্যাস না হয়ে শুধু বাতাস যদি প্রচণ্ড বেগে নিক্ষেপ করা যায় তাতেও প্লেন সামনের দিকে ধাবিত হতে পারে । তখন টার্বোফ্যান ইঞ্জিন তৈরি হয় । 



টার্বোফ্যান ইঞ্জিনে মেইন ইঞ্জিন এর সামনে কমপ্রেসারের দিকে একটি হিউজ বা তুলনামূলক অনেক বড় ফ্যান লাগানো থাকে এবং ফ্যানের উপর একটি ফ্যান কেস থাকে। টার্বোজেট ইঞ্জিনের মত টার্বাইন কমপ্রেসর টিকে ঘুরায় এবং সাথে সাথে ফ্যানটি কেও ঘুরায়। এই ফ্যান যে বাতাস টেনে নেয় তার সামান্য অংশ মাত্র ১৫% ইঞ্জিনের ভেতর দিয়ে যেয়ে টার্বাইন ঘোরানোর শক্তি যোগায় এবং এগজস্ট নজেল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় বাকি ৮৫% ইঞ্জিনের বাইরে দিয়ে ফ্যান কেসের ভেতর দিয়ে দ্রুত গতিতে যেয়ে পেছনে নিক্ষিপ্ত হয় । ফাইনালি বাইরের এবং ভেতরের মিলিত শক্তি পেছনে নিক্ষিপ্ত হয় এবং প্লেন কে সামনে যেতে সাহায্য করে। সামনে যাবার শক্তির ২০% আসে ইঞ্জিনের ভেতরের গ্যাস থেকে, ৮০% আসে ইঞ্জিনের বাইরের ফ্যান কেসের ভেতর দিয়ে আসা বাতাস থেকে। 



যেহেতু টার্বোফ্যান ইঞ্জিনে পুরা ১০০% থ্রাস্ট ভেতর থেকে দরকার নেই সেহেতু ছোট ইঞ্জিন লাগে এবং তাতে ফুয়েল ও কম খরচ হয় এবং একই ভাবে ইঞ্জিনের ভেতর থেকে কম গ্যাস নির্গত হবার কারনে শব্দ ও অনেক অনেক কমে সহনশীল মাত্রায় এসে যায়। ফাইনালি এটা প্রমানিত হয় যে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন সেফ এবং লাভজনক। বর্তমানে একটি বড় অংশ ছোট প্লেনে এবং সকল বড় দুরপাল্লার বিমানে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যাবহারিত হচ্ছে। 

















টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দুই রকম, হাই-বাইপাস এবং লো-বাইপাস রেসিও টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। বেসরকারি যাত্রীবাহী বিমানের প্রত্যাশিত গতি পাবার জন্য ইঞ্জিনের ভেতরের গ্যাস থেকে ২০% এবং ইঞ্জিনের বাইরের ফ্যান কেসের ভেতর দিয়ে আসা বাতাস থেকে ৮০% শক্তিই যথেস্ট । এটিকে হাই-বাইপাস রেসিও টার্বোফ্যান ইঞ্জিন বলে। কিন্তু মিলিটারি প্লেনে আরও গতি দরকার তাই বাইরে দিয়ে কম এবং ভেতর দিয়ে আরও বেশি গ্যাস প্রবাহিত করা হয় এটিকে লো-বাইপাস রেসিও টার্বোফ্যান ইঞ্জিন বলে। মিলিটারি প্লেনে স্পেশালি ফাইটার গুলতে আরও আরও বেশি গতি পাবার জন্য আফটারবার্নার(afterburner) লাগানো হয়। আফটারবার্নার হল এগজস্ট নজেল এর পর সেকেন্ড কম্বাসন চেম্বার। যেহেতু প্রথম কম্বাসন চেম্বার এর কিছু শক্তি টার্বাইন ঘুরানো তে ব্যাবহারিত হয় তাই অত গতি পাওয়া যায় না। সেকেন্ড কম্বাসন চেম্বার এর সকল শক্তি একসাথে পেছনে নিক্ষিপ্ত হয় তাতে করে ফাইটার গুলো সুপারসনিক (শব্দের অপেক্ষাও দ্রুত) গতিতে চলতে পারে। 



টিকাঃ 
APU : একটি, থেকে চারটি এবং ছয়টি ইঞ্জিনের প্লেন দেখা যায়। কিন্তু এছাড়াও বড় প্লেনে আরও একটি ইঞ্জিন থাকে তাকে অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট (auxiliary power unit ) বলে।এই ইঞ্জিন টি প্লেনের পেছনে লেজের দিকে সরু অংশের ভেতর থাকে। যখন প্লেন দাড়িয়ে থাকে এবং সকল মেইন ইঞ্জিন বন্ধ থাকে তখন APU থেকে বিদ্যু উৎপন্য হয় এবং প্লেনের ভেতর লাইট, এসি ও অন্যান্য ইনুস্ট্রমেন্ট চলে । সর্বপরি APU দিয়ে মেইন ইঞ্জিনের স্টাটার চালানো হয়। 



স্টাটারঃ আমরা জানি টার্বাইন ইঞ্জিনে কম্প্রেশার ঘুরলে বাতাস ঢোকে সেই বাতাস কম্বাসন চেম্বার থেকে ফুয়েলের শক্তি নিয়ে টার্বাইন ঘোরায়। যখন টার্বাইন ঘোরে তখন তার শাফট কম্প্রেশার ঘুরায় । কম্প্রেশর ঘোরে না যত সময় টার্বাইন না ঘোরে অর্থাৎ টার্বাইন আগে ঘুরতে হয় , কিন্তু টার্বাইন কিভাবে ঘুরবে যদি কম্প্রেশর ঘুরে বাতাস ভেতরে না ঢোকে? বোঝা যাচ্ছে ডিম আগে না মুরগি আগে টাইপের একটা সমস্যা আছে । এই সমস্যা সমাধানের জন্য ইঞ্জিনের গায়ে একটি স্টাটার মটর লাগানো থাকে যা APU থেকে বিদ্যু নিয়ে প্রাথমিক ভাবে কম্প্রেশর কে ঘুরিয়ে ভেতরে বাতাস ঢুকতে সাহায্য করে তারপর ইঞ্জিন নিজে নিজে ক্রমাগত চলতে থাকে। 



IDG : IDG হল Integrated Drive Generator যেটি আসলে মেইন ইঞ্জিন থেকে বিদ্যু উৎপন্য করে প্লেনের ভেতর লাইট, এসি ও অন্যান্য ইনুস্ট্রমেন্ট চালানোর শক্তি যোগায় । এটির কাজ আমাদের মটরগাড়ি এবং পিস্টন ইঞ্জিন প্লেনের অল্টারনেটর এর মত। IDG এর ভেতর দুইটা জিনিষ থাকে প্রথমত একটি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার জেনারেটর এবং আরেকটি হল CSD. CSD র কাজ হল মেইন ইঞ্জিন যত জোরেই ঘুরুক জেনারেটরে সব সময় একই গতি সরবরাহ করা। জেনারেটর এর শাফট মেইন ইঞ্জিনের শাফট এর সাথে ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে অবস্থান করে একটি গিয়ার বক্সের মাধ্যমে চলে । 




নিউটনের দ্বিতীয় সুত্রঃ প্রতেক ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরিত প্রতিক্রিয়া আছে। অর্থাৎ প্রতেক ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া পরস্পর সমান ও বিপরিত। অর্থাৎ সুপারফেসিয়ালি বলা যায় প্লেনের পেছন দিয়ে যত জোরে গ্যাস নির্গত হবে প্লেন ও তত গতিতে সামনে যাবে। সঠিক ক্যালকুলেশন এর জন্য প্লেনের ভর ও ধরতে হবে। 

দানিয়েল বার্নুলি-র সুত্রঃ ফুয়িড (তরল এবং গ্যাস) এর প্রবাহর গতি বৃদ্ধি পেলে সাথে সাথে এর প্রেসার বা বাধা দেবার শক্তি কমে যায়। 

রাইট ব্রাদারসঃ অরভিল এবং উইলবার রাইট দুই ভাই প্লেন এর আবিস্কারক ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বার প্রথম প্লেনে তৈরি করে উড়ায়। এই ব্রাদারস দের সময় থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পযন্ত সকল প্লেনই পিস্টন ইঞ্জিন ছিল । 
ধন্যবাদ । 


ছবি সহ বিস্তারিত - http://amderblogger.blogspot.com/2015/08/blog-post_17.html
সুত্রঃ ইন্টারনেট । 

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger Widgets